বুধবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২১

দোল( Holi )উৎসব - 2023 । হোলি( Holi ) -রঙের উৎসব । জেনে নিন 2023 এ দোল( Dol ) ও হোলি( Holi ) কবে ও সঙ্গে অজানা কথা - Binadan4u

হোলি হল রঙের উৎসব । ভারতবর্ষে তো বটেই সারা বিশ্বে অত্যন্ত ধুমধাম করে হোলির আয়োজন করা হয়।দোল( Dol ) উৎসব ও হোলি( Holi )পরস্পর সম্পর্ক যুক্ত ।2023 হোলি( Holi ) কবে হবে বা দোল উৎসব কবে পালিত হবে অর্থাৎ এই উৎসব গুলোর তারিখ আপনারা নীচে দেখে নিতে পারেন। এছাড়াও জেনে নিতে পারেন এই উৎসব সম্পর্কে কিছু অজানা কথা ।

Holi 2021


দোল( Dol ) উৎসব ও হোলি( Holi ) কী ?

দোলযাত্রা একটি হিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। বহির্বঙ্গে পালিত হোলি( Holi ) উৎসবটির সঙ্গে দোলযাত্রা উৎসবটি সম্পর্কযুক্ত। এই উৎসবের অপর নাম বসন্তোৎসব। ফাল্গ‌ুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।


বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, ফাল্গ‌ুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির বা গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সঙ্গে রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। দোলযাত্রার দিন সকালে তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। এরপর ভক্তেরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রং খেলেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। আবার এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।

দোলযাত্রা উৎসবের একটি ধর্মনিরপেক্ষ দিকও রয়েছে। এই দিন সকাল থেকেই নারীপুরুষ নির্বিশেষে আবির, গুলাল ও বিভিন্ন প্রকার রং নিয়ে খেলায় মত্ত হয়। শান্তিনিকেতনে বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্তোৎসব পালনের রীতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই চলে আসছে। দোলের পূর্বদিন খড়, কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি জ্বালিয়ে এক বিশেষ বহ্ন্যুৎসবের আয়োজন করা হয়। এই বহ্ন্যুৎসব হোলিকা দহন বা মেড়াপোড়া নামে পরিচিত। উত্তর ভারতে হোলি উৎসবটি বাংলার দোলযাত্রার পরদিন পালিত হয়।এই  উৎসবটি ধুলান্দি নামেও পরিচিত, এটি হরিয়ানা রাজ্যে জনপ্রিয় একটি নাম।

2023 দোল( Dol ) ও হোলি( Holi ) কবে হবে?


2023 এ দোল পালিত হবে 7মার্চ বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী 22ই চৈত্র, মঙ্গলবার ও পরের দিন অর্থাৎ বুধবার হোলি উৎসব পালন করা হবে।


ইতিহাস

হোলির বর্ণনা প্রাচীন কাল থেকেই পাওয়া যায়। বিজয়নগর রাজ্যের রাজধানী হাম্পিতে এই উত্সবটির 16 তম শতাব্দীর কেরিকেট পাওয়া গিয়েছিল। একইভাবে, বিসিবি পাহাড়ের কাছে রামগড়ে হোলির বর্ণনা দিয়ে 300 খ্রিস্টপূর্ব শিলালিপি পাওয়া গেছে।

হোলির কিংবদন্তি

হিরণ্যকশিপু-প্রহ্লাদ কাহিনী, রাধা-কৃষ্ণ কিংবদন্তি এবং ওগ্রেস (মহিলা দানব) ধুন্দির মতো হোলির উত্সবটির পিছনে বিভিন্ন কিংবদন্তী রয়েছে।

হলিকা দহন হিন্দু বর্ষপঞ্জি অনুসারে ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা (পূর্ণ চাঁদের দিন) পড়ে। উত্সব অশুভ উপর ভাল বিজয় প্রতীক। এটি হোলির একদিন আগে যথাযথ অগ্নিসংযোগের সাথে উদযাপিত হয়। এটি হিরণ্যকশিপুর বোন হলিকাকে হত্যার উদযাপন করে। এই অগ্নি আগুনকে বোঝায় যেহেতু হলিকা (হিরণ্যকশিপুর বোন) প্রহ্লাদকে হত্যার চেষ্টা করতে গিয়ে নিজেকে পুড়িয়ে ফেলেছিল।

শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার অমর ভালবাসার স্মরণেও রাঙওয়ালি হোলি পালন করা হয়। একসময় কৃষ্ণ যশোদাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন কেন তিনি রাধার মতো ফর্সা নন, যশোদা কৌতুক করে কৃষ্ণকে রাধার মুখে রঙ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছিল কারণ এটি তার বর্ণকেও অন্ধকার করে তুলবে। শ্রীকৃষ্ণ তখন রাধা ও গোপির সাথে বিভিন্ন রঙের খেলেন। সেই থেকে দিনটি রঙের উত্সব হিসাবে পালন করা হয়।

অগ্রেসের কিংবদন্তি (মহিলা দানব) ধুন্দি বলেছেন যে শিবের অভিশাপের কারণে তাঁকে পৃথুর লোকেরা ধাওয়া করেছিল।


ভারতের বিভিন্ন অংশে হোলি( Holi ) উদযাপন

ব্রজ অঞ্চলে এই উত্সবটি বিশালভাবে পালিত হয়, যেখানে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ এবং দেবী রাধা তাদের লীলা অভিনয় করেছিলেন। ব্রজের বারসানার লাঠমার হোলি খুব বিখ্যাত। মধ্য প্রদেশের মালওয়া অঞ্চলে, রংপঞ্চমী হোলির 5 তম দিন পরে পালিত হয়। এটি হোলির চেয়েও বেশি উত্সাহের সাথে উদযাপিত হয়। রাঙ পঞ্চমীতে লোকেরা মহারাষ্ট্রের কিছু অংশে শুকনো রঙ নিয়ে খেলেন।শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান মথুরা তে ও রাধার জন্মস্থান বৃন্দাবন এ 16 দিন ব্যাপি দোল উৎসব পালন করা হয়।

বর্ণের এই উত্সব বর্ণ, শ্রেণি বা লিঙ্গ নির্বিশেষে ঐক্য এবং ভালবাসার ইঙ্গিত দেয়। আপনাকে শুভ হোলির বা দোলের অনেক শুভেচ্ছা!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন